মাভাবিপ্রবির কৃষ্ণচূড়া লেনটি এখন সৌন্দর্যের অনন্য প্রতীক

news paper

সহদেব তাম্বুলী, মাভাবিপ্রবি

প্রকাশিত: ১০-৭-২০২৪ বিকাল ৫:৩০

432Views

টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবন পার হলেই পঞ্চম ফটক। সেই ফটকটি থেকে শুরু হয়ে দ্বিতীয় একাডেমিক ভবন পর্যন্ত রয়েছে কৃষ্ণচূড়া গাছের সারি। এসব গাছের কারণেই রাস্তাটির নাম হয়েছে কৃষ্ণচূড়া লেন। কৃষ্ণচূড়া লেনের সবুজ বৃক্ষের শাখায় শাখায় যেন রঙের গালিচা। এই বাহারী রঙের ফুলগুলো সবুজ প্রকৃতিতে এনে দিয়েছে বাড়তি সৌন্দর্য যা দেখে মুগ্ধ প্রকৃতিপ্রেমীরা। ডালে ডালে কৃষ্ণচূড়া ফুল রাঙিয়ে তুলেছে ক্যাম্পাসের পথ প্রান্তর, রাস্তার মোড়,একাডেমিক ভবন সমূহ ; সৃষ্টি করেছে বৈচিত্র্যময় পরিবেশ। সবুজের ফাঁকে লাল কৃষ্ণচূড়া ফুলের সৌন্দর্য প্রকৃতিতে এক অন্যরকম আবেশ সৃষ্টি করেছে যা যেকোনো পর্যটকদের নজর কারবে। প্রকৃতিতে যখন রংয়ের ছড়াছড়ি, তখন প্রকৃতির এই রঙিন মুহূর্তকে ধরে রাখতে অনেক প্রকৃতি প্রেমীরা ক্যামেরা বন্ধি করছে নিজেদেরকে। 

অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী শাকিলা আক্তার রাবিনা বলেন -ষড়ঋতুর দেশে কত না ফুলই ফোটে কিন্তু সকলেই অপেক্ষায় থাকে কৃষ্ণচূড়ার লাল সিন্গ্ধতায়। তাইতো গ্রীষ্মকালে যোগ হয় কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া ও জারুলের মতো ফুলের সৌন্দর্য। কৃষ্ণচূড়ায় ও রাধাচূড়ায় সেজেছে চারপাশ, যারা প্রকৃতি ভালোবাসে তারা কিছুক্ষণের জন্য হলেও হারাচ্ছে প্রকৃতির রঙিন মায়ায় এবং গাছের নিচে ছড়িয়ে ছিটে থাকা কৃষ্ণচূড়া ফুলগুলো দেখলে মনে হয় যেন লাল রঙের আলপনা।

টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী হৃদয় হোসেন বলেন -প্রকৃতি চলেছে তার নিজস্ব গতিতে। বাংলার নব প্রকৃতি প্রতিনিয়ত নতুন রূপে সজ্জিত হচ্ছে রক্ত রাঙা নয়নাভিরাম ফুলের সৌন্দর্যে। দখিনা হাওয়ায় সবুজ বৃক্ষের শাখায় শাখায় রঙিন ফুলগুলোর হালকা দোল খাওয়ার দৃশ্য খুবই মনোমুগ্ধকর।আমরা যদি প্রতিটি জায়গা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রেখে ফুলে ফুলে সাজিয়ে দিতে পারি, তাহলে আমাদের ক্যাম্পাসটি পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হবে। 

ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসা পর্যটক কাউসার মিয়া বলেন- কৃষ্ণচূড়া ফুলে চারপাশের প্রকৃতি জীবন্ত হয়ে উঠেছে। ফুল সকলেই ভালোবাসে। কৃষ্ণচূড়া ফুল বরাবরই আমার ভালো লাগার মতো ফুল। কারণ লাল রং ভালোবাসার প্রতীক। ডালে ডালে কৃষ্ণচূড়া ফুল প্রকৃতিতে অন্য রকম সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয়। প্রকৃতির ঢেলে দেওয়া অপরুপ সৌন্দর্য দেখে আমরা বরাবরই আপ্লুত হই । 

পর্যটক মহাদেব সরকার বলেন -কৃষ্ণচূড়া ফুল দেখতে আমার খুবই ভালো লাগে। ক্যাম্পাসে বাহারী রংয়ের ফুলের সৌন্দর্য দেখতে মাঝে মাঝেই পরিবার নিয়ে এখানে আসি।অন্যান্য ফুলের মতো কৃষ্ণচূড়া ফুলের মাঝে আলাদা একটা শোভা আছে, যা আমাদের মতো প্রকৃতি প্রেমীদের আকর্ষীত করে। ক্যাম্পাসের এসব বাহারী রঙের ফুল পর্যটকদের দৃষ্টিনন্দিত করার প্রধান আকর্ষণ । খুব ভালো লাগে যখন লাল রং এ ভরপুর প্রকৃতির সৌন্দর্যমন্ডিত এই ক্যাম্পাস দেখি। আমার কাছে মনে হয় এই ক্যাম্পাসের সবচেয়ে মুগ্ধতার জায়গা হল কৃষ্ণচূড়া লেন। 
 
উল্লেখ্য,যেভাবে কৃষ্ণ চূড়া লেনের নামকরণ হলো-২০১৯ সালে ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের অষ্টম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা নিজেরা টাকা জমিয়ে প্রাণের ক্যাম্পাসকে নতুন রূপে সাজিয়ে তোলার প্রত্যাশায়  সারি বদ্ধভাবে রোপণ করেছিলেন আটটি কৃষ্ণচূড়া গাছ। যখন এই গাছ গুলো বড় হতে থাকে এবং কৃষ্ণচূড়া ফুলের সৌন্দর্য চারপাশে মুগ্ধতা সৃষ্টি করা শুরু করে, তখন ঐ প্রাঙ্গন টিকে ভিন্ন নামে, ভিন্ন সাজে প্রতিষ্ঠিত করার ইচ্ছটা আরও সুস্পষ্ট হতে শুরু করে সকলের মাঝে। এরই ধারাবাহিকতায় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, দর্শনার্থীদের লোকমুখে প্রচলিত হতে শুরু করে ছায়াঘেরা রাস্তাটির নাম 'কৃষ্ণচূড়া লেন'।তখন ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের অষ্টম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা রাস্তার পাশের দেয়ালে রঙ দিয়ে লিখে দিয়েছিলেন 'কৃষ্ণচূড়া লেন'। কৃষ্ণচূড়া গাছগুলো সারিবদ্ধ কারণ রাস্তাটিতে প্রখর রোদে শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে দীর্ঘদিনের কষ্ট লাঘব হয়েছে।এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা যাতায়াত করেন। দূর থেকে গাছগুলোকে দেখে অনেকেই ফুলের তোড়া বলে অভিহিত করেছেন। 


আরও পড়ুন